আমেরিকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪ , ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফেডারেল এজেন্ট পরিচয়ে জালিয়াতি, মিলফোর্ড মহিলা অভিযুক্ত কিশোর আটক কেন্দ্র থেকে পালিয়েছে দুই  কিশোর হুইটমারকে হুমকিমূলক ইমেল আইনি লড়াই চালাবেন না ওয়েস্টল্যান্ডের বাসিন্দা মেমোরিয়াল ডে'তে  ১ মিলিয়নেরও বেশি মিশিগান বাসিন্দা ভ্রমণ করতে পারেন যৌন নিপীড়নে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন ফার্মিংটন কোচ ওকল্যান্ড কাউন্টির জঙ্গলে ছোট বিমান বিধ্বস্ত শেলবি টাউনশিপে অবৈধ ওপিওড প্রেসক্রিপশনে ডাক্তারের ১২ বছরের সাজা ডেট্রয়েট চিড়িয়াখানার সিম্বা সিংহ মিশিগানকে বিদায় জানায় যৌন নিপীড়নের দায়ে ইংহাম কাউন্টির এক ব্যক্তির ২০ বছরের কারাদণ্ড ওয়েইন কাউন্টি ১০০টি এয়ার কোয়ালিটি মনিটর চালু করেছে নরসিংদীতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে গায়ক পিয়ালসহ নিহত ২ ডেট্রয়েট নিউজ রিপোর্টার সারা রাহাল মনোনীত প্রধান রাস্তার কাজের জন্য ২২ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ লিভোনিয়ায় বিনামূল্যের কমিউনিটি কলেজের পরিকল্পনা করছেন হুইটমার আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ৩ আসামির যাবজ্জীবন, ৬ জন খালাস চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, পাইলট নিহত মিশিগানে ১১ টর্নেডোর আঘাত, বাড়ি-ঘর ধ্বংস মিশিগানের তিনটি টর্নেডোর আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চুক্তি না হলে ধর্মঘটের অনুমতি দিয়েছেন ওয়ারেন স্ট্যাম্পিং কর্মীরা গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাতাদের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা আসছে

প্রাণের টানে গাজীর গান গেয়ে চলছেন লাখাইয়ের রফিক শাহ

  • আপলোড সময় : ২৭-০২-২০২৩ ০৩:৪৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০২-২০২৩ ০৩:৪৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
প্রাণের টানে গাজীর গান গেয়ে চলছেন লাখাইয়ের রফিক শাহ
লাখাই, (হবিগঞ্জ) ২১ আগস্ট : শহুরে গান আর ইন্টারনেটকেন্দ্রিক সংস্কৃতির দাপটে অনেক কিছুর মতোই হারিয়ে যেতে বসেছে গাজীর গান বা গীতও। তবে দেশের অনেক স্থানে এই গানের ধারা প্রাণের টানে ধরে রেখেছেন কিছু শিল্পী। লোকজ সংস্কৃতির অংশ এ-ই লোকগাঁথা গেয়ে  লাখাইয়ের রফিক  শাহের (৭৮) জীবন চলে। উপজেলার করাব গ্রামের  মৃত রইছ আলীর ছেলে তিনি। দীর্ঘ ৬০ বছর যাবত দেশের বিভিন্ন স্থানে গাজী কালুর গান শুনিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। 
উপজেলার স্বজনগ্রামে গিয়ে দেখা যায়  হাতে ডুগডুগি বাজিয়ে সুরেলা কন্ঠে বাড়ি বাড়ি গিয়ে  গাজী কালুর মাহাত্ম্য বর্ণনা করছেন রফিক শাহ। মানুষ সাধ্যমতো চাল, ডাল, টাকা পয়সা দিচ্ছেন। পাশাপাশি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছেন বাস্তবিক জীবনের পটভূমিতে গাওয়া এ-ই লৌকিক উপাখ্যান। 
এ-ই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে রফিক শাহ জানান, আধুনিক যুগের ছেলেমেয়েরা এই গানগুলো না শুনলেও বয়স্করা এগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনে।  কেউ কেউ খুশি হয়ে ১০/২০ টাকা দেয় । আল্লাহর রহমতে ভালোই চলছে জীবন। সুমিত্রা রায় নামে একজন জানান, উনাদের কাছ থেকে তাবিজ নিয়েছিলাম ছোট বাচ্চার প্রস্রাবের সমস্যা দূর করার জন্য। সমস্যা দূর  হয়েছে। 
এখনো অনেকে গাজীর নামে মানত করে। নিরাপদ থাকা, সন্তান লাভ, প্রকৃতির বালা-মুসিবত থেকে ফসল রক্ষা, মামলা মোকদ্দমায় জয়লাভ, রোগ থেকে আরোগ্য লাভ, এমনকি কন্যাসন্তানের সময়মতো সুপাত্রে বিয়ে না হওয়া ইত্যাদি সমস্যা উত্তরণের জন্য গাজী পীরের শরণাপন্ন হয়। গাজী পীরকে মনে করা হয় অলৌকিক শক্তির অধিকারী অসাম্প্রদায়িক জিন্দাপীর। অলৌকিক শক্তির কারণেই সুন্দরবনের বাঘ ও কুমির গাজীর কথা নাকি শোনে। গাজীভক্তদের বিশ্বাস, গাজী পীরের নামে দানসহ গাজীর দোয়া মানুষ যে কোনো অশুভ শক্তিকে বশ করতে পারে।
শাহ গাজী, কালু ও চম্পাবতীর পরিচয় নিয়ে আছে নানা ইতিহাস। জনশ্রুতি আছে বৈরাগ নগরের শাসক দরবেশ শাহ সিকান্দারের ছেলে শাহ গাজী। কালু ছিলেন শাহ সিকান্দারের পোষ্যপুত্র। আর চম্পাবতী ছিলেন সাপাই নগরের সামান্ত রাজা রামচন্দ্র ওরফে মুকুট রাজার মেয়ে। 
প্রথম দেখাতেই শাহ গাজী আর চম্পাবতী একে অন্যের প্রেমে পড়ে যায়। ভুলে যান নিজেদের জাত, ধর্ম, স্থান, কাল। তাদের মিলনের মাঝে প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায় সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি। ছাপাই নগরের বলিহর বাওরের তমাল গাছ তলায় গাজী নিয়মিত অপেক্ষা করতেন চম্পাবতীর জন্য। তার সার্বক্ষণিক  সঙ্গী ছিলেন কালু। 
গাজীর প্রকৃত নাম গাজী মিয়া বা বড়খান গাজী। তার পিতার মৃত্যু হয় ১৩১৩ সালে। সেসময় তিনি ছিলেন ত্রিবেনী ও সপ্তগ্রাম অঞ্চলের শাসনকর্তা। বাল্যকালেই ফকির-দরবেশের সাহচর্যে আধ্যাত্মিক সাধনায় উন্নতি লাভ করেন গাজী। পিতার কাছে শাসন ক্ষমতা নিতেও অস্বীকার করেন তিনি। ইসলাম প্রচার শুরু করেন দক্ষিণ বঙ্গের যশোর-খুলনা অঞ্চলে। ধর্ম প্রচারে বাধা প্রাপ্ত হয়ে রাজা মুকুট রায়ের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ হয় তার। তখনই হয়ত তার চম্পাবতীর সঙ্গে দেখা হয়।
অবশেষে গাজী অনুসারীদের নিয়ে বহু খণ্ড যুদ্ধের পর উদ্ধার করে চম্পাবতীকে। এরপর তারা বারোবাজার ফিরে এসেছিলেন। তবে গাজীর বাবা শাহ সিকান্দার বিষয়টা একেবারেই মেনে নেননি। মুকুট রাজা ছিলেন তারই প্রতিবেশী শাসক। হিন্দু সমাজের অসন্তুষ্টির কারণে তিনি গাজীকে বাড়িতেই উঠতে দেননি। বিতাড়িতও করেন সমাজ থেকে। তবে এখানে এসে গাজী পীর লোকজ দেবতা হিসেবে পূজিত হন। 
হিন্দু-মুসলমান অধ্যুষিত সুন্দরবনের সবাই তাকে স্মরণ করে। যে কেউ সুন্দরবনে ঢোকার আগে হাতজোড় করে বনবিবির পাশাপাশি গাজীর নামে দোহাই দিয়ে ঢোকে। সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়গুলোতে সাদা বর্ণের মুখে দাড়িসহ কোথাও জামা-পায়জামা-পাঞ্জাবিসহ মূর্তি, কোথাও লুঙ্গি পরা ঘাড়ে গামছাসহ মূর্তি পূজিত হয়। এই পূজার নিরামিষ নৈবেদ্য হলো বাতাসা, পাটালি, আতপচালের শিরণি ইত্যাদি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ
পুলিশ অফিসারকে গুলি, ল্যান্সিং বাসিন্দা অভিযুক্ত

পুলিশ অফিসারকে গুলি, ল্যান্সিং বাসিন্দা অভিযুক্ত